Wednesday, October 07, 2015

"ইমাম গাযযালী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে ( ISA) ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যাওয়ার্ড" -অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা ।

ইমাম গাযযালী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে ( ISA) ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যাওয়ার্ড
                শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশাল অনুপ্রেরণা
                                - অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ কানেকটিং ক্লাসরুমসের সাহায্যে শিক্ষা কারিকুলামের সাথে সমন্বয় করে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেএর সাথে সংযুক্ত রয়েছে (UK) ইউ কে পার্টনার স্কুলবিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর কার্যক্রম ছড়িয়ে রয়েছেইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশ অন্যতম
২০০৯ সাল থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠান সহ পাবনার মোট ৫টি প্রতিষ্ঠান একটি ক্লাস্টারের আওতায় জেলা শিক্ষা অফিসারের তত্ত্ববধানে কাজ করতে থাকেএর মূল কাজ ছিল এক দেশের শিক্ষার সাথে আরেক দেশের শিক্ষার সমন্বয় করে শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দকে এষড়নধষ ঈরঃরুবহ হিসেবে তৈরী করার চেষ্টা করাবিশ্বকে যেহেতু এষড়নধষ ঠরষষধমব এর সাথে তুলনা করে কাজ করা হচ্ছে, সেখানে নাগরিকদের সমন্বয় ছাড়া তো কখনোই পৃথিবী একক ভাবে চলতে পারবে নাএজন্যই প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের এ বিষয়গুলোকে অবহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে ট্রেনিং দেয়া হতোএকজন মানুষকে এষড়নধষ ঈরঃরুবহ করতে হলে তার বিভিন্ন দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, আবহাওয়া, কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে হবেআর এ জানার জন্য রয়েছে বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সুযোগ
আমাদের সাথে পার্টনার স্কুল রয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কানেকটিং ক্লাসরুমসের আওতাধীন ইউ কে এর রেডব্রিজ ও ইলফোর্টে অবস্থিত পার্টনার তিনটি স্কুলপ্রতি বছর সেখানের কর্মকর্তাবৃন্দও আসেন এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও ভিজিট করতে যাওয়া হয়ভিজিট করে আমরা যেটা দেখেছি ওখানের শিক্ষা কারিকুলাম আমাদের দেশের চেয়ে অনেক সহজ কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতা অনেক বেশী২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তাদের ক্লাস পরিচালনা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকবৃন্দ তাদের হাতে কলমে ও মেধায় দক্ষ করে দেন ধারাবাহিকভাবেফলে কোন বেকার খুঁজে পাওয়া যাবে নাসব রকম কাজ করতে তারা অভ্যস্থএমনকি বড় বড় ছুটিতে শিক্ষার্থীবৃন্দ বিভিন্ন ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করে উপার্জন করছেতারা কাজকে সম্মান করে, কাজ না করাই তাদের কাছে লজ্জার  মৌলিক মানবীয় গুনাবলী খুবই স্ট্রংতাদের সকল চিন্তা পরবর্তী প্রজন্মের জন্যঅতীতকে মূল্যায়িত করে পরবর্তী প্রজম্মের জন্য উদাহরণ রেখে যায় এবং পুরাতন স্মৃতি ধরে রেখে নতুনকে আরো সুন্দর করে সাজিয়ে অনুপ্রাণিত করে
আসলে এই কানেকটিং ক্লাসরুমের সাথে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ কাউন্সিলের বিশ্বজুড়ে করা একটি কর্মসূচীযা জ্ঞান, দক্ষতা, জীবন ধারণ, আচার-অনুষ্ঠানে ও কাজের মাধ্যমে তরুনদের বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে ভূমিকা রাখতে সাহায্য করেএ কর্মসূচীর মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজনীয় সব দক্ষতা অর্জনে আমাদের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করছেযার মধ্যে রয়েছে সৃষ্টিশীলতা, বিশেষনী ভাবনা, প্রযুক্তি বিষয়ক ভাবনা, মানবিকতা ও বৈশ্বিক নাগরিকত্বশিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও মেধা বিকাশকে তারা বেশী গুরুত্ব দেন
কানেকটিং ক্লাসরুমসের মাধ্যমে শিক্ষকদের স্কিল ও চিন্তা চেতনার উন্নতি হচ্ছেতেমনি শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ ও দক্ষতা বৃদ্ধি কল্পে বিভিন্ন শেয়ারিং এর মাধ্যমে দক্ষ নেতৃত্ব সৃষ্টিতে সহায়ক হচ্ছেযেমন স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছেশিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানে ক্ষেত্রে স্টুডেন্টদের ভয়েজের গুরুত্ব অনেক বেশীনেগেটিভ চিন্তার চেয়ে গঠনমূলক চিন্তাই বেশী করতে আগ্রহীআমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা এম এ পাশ না করা পর্যন্ত সাধারণত কোন কাজে প্রবেশ করতে চায়না-এটা দেখে তারা ভীষনভাবে আশ্চর্যান্বিত হয়বিশাল সময় অপচয় বলে মনে করে

তবে তারা অবাক হয় আমাদের দেশের শিক্ষকবৃন্দ কি করে এত কষ্ট করে ধৈর্যের সাথে এত বেশী সংখ্যক শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠদান করে এটা দেখেশিক্ষার্থীরাও মনোযোগ দিয়ে পাঠ গ্রহণ করেতাছাড়া আমাদের দেশের মানুষের আন্তরিকতা ও বহিঃপ্রকাশেও তারা ভীষণ মুগ্ধ
আজ দীর্ঘ ৬ বছর যাবত তাদের সাথে কাজ করে সত্যিই মনে হচ্ছে আমরা এ প্রতিষ্ঠাগুলোর সকল জনশক্তি একই পরিবারভূক্তআগামী মাসে আমাদের প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক সহ পাবনার তিনটি প্রতিষ্ঠানের ৩ জন (UK) এর স্কুল ভিজিটে যাচ্ছেনসেখানের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাথেও মত বিনিময় করবেননভেম্বর মাসে আবার ওনারা ভিজিটে আসবেন আমাদের প্রতিষ্ঠান গুলোতেএভাবেই সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করা হয়
বাংলাদেশের স্কুল গুলো Online এর মাধ্যমে আগের তুলনায় এখন অনেক বেশী কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেকাজের মূল্যায়নের জন্য আন্তর্জাতিক কাজ ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজের আলোকে ৩ ধরনের অধিফ এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে
১ . Foundation Award
2 . Secondary Award
৩. Full Award
সবচেয়ে ভাল কাজ করলেই Full Award  এর মর্যাদা পাওয়া সম্ভবআমাদের প্রতিষ্ঠানটি Full Award  পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের সকলেই আনন্দিতএজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই বৃটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কর্মকর্তাবৃন্দকে। ISA Award গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা ও প্রতিষ্ঠানের কো-অর্ডিনেটর জনাব আইয়ুব হোসেন খাঁন 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত  ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজার রহমানবিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব জনাব নজরুল ইসলাম খান ও নায়েমের মহাপরিচালক প্রফেসর মোঃ হামিদুল হক ও সম্মানিত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনস্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর বারবারা উইকহ্যামএছাড়াও কানেকটিং ক্লাসরুমস সম্পর্কে পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে অবহিত করেন রিজিওনাল হেড অব স্কুল জনাব রেবেকা পিটটন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কর্মকর্তা মোঃ শাকিল আমানুল্লাহ সিনহা 
আমরা এ যাবত ২ দেশের সাথে বেশকিছু বিষয় নিয়ে কাজ করেছিযেমন- Journey to school, View from windows, Air pollution, Change, Water, Literacy, Hero and Heroin’s, digester  সহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপরসেগুলো বিষয়ের উপর বিভিন্ন মাধ্যমে যেমন চিত্রাংকন, গল্প ও নাটক ও ছোট ছোট নিবন্ধের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় যা ২ দেশের  স্কুলের মাঝেই শেয়ার করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে Global Citizen হিসেবে নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে পারেআমাদের প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালে Full Award পেয়ে ১ম স্থান অধিকার করেগত ১৩ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ কাউন্সিল কানেকটিং ক্লাসরুম ৩য় ধাপের উদ্বোধনী ঘোষনা করেন তাদের নিজস্ব কার্যালয়েএখানে আন্তর্জাতিক কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করে গ্লোবাল লার্নিং এ নিজেদের অন্তর্ভূক্তি ও অগ্রসরের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৪ ও ২০১৫ সেশনের মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যাওয়ার্ড (ISA) প্রদান করে সম্মানে ভূষিত করেনবাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য গ্লোবাল সিটিজেন সম্পর্কে ধারণা বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা করা একান্ত প্রয়োজন