Tuesday, September 15, 2015

"প্রাথমিক শিক্ষার সেকাল ও একাল"



                                                    "প্রাথমিক শিক্ষার সেকাল ও একাল" 

                                      -শর্বানী দত্ত 
 


অনেক দিন থেকেই ভাবছিলাম এই বিষয়টি নিয়ে লিখব ।তাই আজ লিখতে বসেই গেলাম । বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্প্রসারণের সাথে সাথে  সম্প্রসারিত হচ্ছে মানুষের জ্ঞান, পরিবর্তন হচ্ছে মানুষের ধ্যান ধারণা । তার সঙ্গে একুশ শতকের শিক্ষার্থীর চাহিদা, আগ্রহ, রুচিবোধ, চিন্তা চেতনা ও অনেকাংশে অনেক সম্প্রসারিত ।বিগত  কয়েক বছর আগের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মন মানসিকতা, চাহিদা, রুচিবোধ আর বর্তমান যুগের শিক্ষার্থীদের সব কিছুতে পার্থক্য অনেক ।গতানুগতিক ধারা ফেলে দিয়ে আজ তারা বাস করছে ডিজিটাল যুগে । পেছন ফেরে তাকালে  খুব বেশী দিন নয় আমাদের সময়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর শেখন শেখানো কার্যাবলী আর এই সময়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর শেখন শেখানো কার্যাবলী অনেক দিক থেকে এগিয়ে। আমি আমাদের বিদ্যালয়ের কথাই ধরলাম ,যেখানে একটি শিশু  ৫-৬বছর বয়সে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেই দেখতে পাচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস,  প্রজেক্ট্রের মাধ্যমে প্রদর্শিত বিভিন্ন ছড়া গান, ভিডিও,বাস্তব ছবি ।  অনেক জটিল বিষয় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হচ্ছে  সহজ ভাবে ।বাড়ছে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি । বিষয়বস্তু সহজে বোধগম্য হওয়ায় মুখস্ত বিদ্যাকে আর তেমন কাজে লাগাতে হচ্ছে না তাদের । বাস্তব চিত্র, ভিডিও দেখে অনেক কঠিন বিষয় বুঝতে পারছে সহজ করে । পাঠ গ্রহণ করছে আনন্দের সাথে ।  বিদ্যালয়ে ডিজিটাল পিয়ানো যা হয়ত আমরা কেউ কেউ এটিকে দেখেছি  নিজ নিজ বিদ্যালয়ে দেয়ার পর আর শিক্ষার্থীদের কাছে আজ এটি খুবই পরিচিত একটি মিউজিক্যাল যন্ত্র । আমার মনে হয় হয়ত এখনো অনেকে আছেন যারা এই  ডিজিটাল পিয়ানোর সাথে পরিচিত নন । ইংলিশ ইন একশন এর  ডিজিটাল এমপ্লিফায়ার তার সঙ্গে  ইংরেজী বিষয়ের প্রতি  অধ্যায়ের  টেক্সট ভয়েজ। শিক্ষার্থীরা আজ অতি পরিচিত ‘নেট’ শব্দটির সাথে । তার সাথে আছে কিছু কিছু  বিদ্যালয়ের ওয়েব পেইজ যেখানে প্রতিদিনই আপলোড হচ্ছে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন  কর্মকান্ড। ব্রিটিশ কাউন্সিলের কানেক্টিং ক্লাসরুম প্রজেক্ট যেখানে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল নেট ওয়ার্কিং এর মাধ্যমে  যোগাযোগ করতে পারছে দেশের বাইরের একটি বিদ্যালয়ের সাথে , জ্ঞান অর্জন করতে পারছে অন্য একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, সংস্কৃতি , আচার অনুষ্ঠান ও ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে । যা কিনা বিগত দুই দশকের চেয়ে হাজার গুণ এগিয়ে । এই সমস্ত কিছু আজ আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় ভাবলেই অবাক হয়ে যাই । কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব, মাল্টিমিডিয়া, ডিজিটাল পিয়ানো আজ শিক্ষার্থীদের কাছে অতি পরিচিত ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ।   আর তখনকার  সময়ের বিদ্যালয় গুলোর  এত ডিজিটালাইজেশন  ছিল কল্পনার ও অতীত ।  মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী আগামী শিক্ষা বছরের শুরুতেই ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা হাতে পাচ্ছে ট্যাব । কাজ শুরু হয়ে গেছে “প্রাথমিক শিক্ষা কন্টেন্ট ইন্টার অ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রুপান্তর”  আর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার্থীরাও পেয়ে যাবে  ট্যাব । কোমলমতী শিশুদের আর বহন করতে হবে না পিঠে ভারী ব্যাগের বোঝা । সব কিছু মিলিয়ে আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি  বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে । ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড’ আর তাই আমরা সবাই মিলে  বাংলাদেশকে  একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি সত্যিকার অর্থে  ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য ।

No comments:

Post a Comment