ফকির লালন ছিলেন মানবতাবাদী, দিব্যজ্ঞানের অধিকারী ও জাত ধর্মের উদ্ধে একজন
মানুষ। কোন শাস্ত্র দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন না তিনি। মূলত মানবতা ধর্মে বিশ্বাস
করতেন। মানুষকে ভক্তি করা ও হিংসার পথ পরিহার করা ছিল তার দর্শন। তার কাছে জাতি
ধর্ম বর্ণের কোন ভেদাভেদ ছিলনা। তার রচিত গানগুলো সমগ্র বিশ্বে লালন গীতি নামে পরিচিত
। গানগুলো শুধু তার ভক্ত নয় সাধারণ মানুষের মুখে মুখে সমগ্র বিশ্বে ছরিয়ে রয়েছে।
তার রচিত গানের সংখ্য দুই হাজারের বেশি। তাকে কেউ বাউল লালন কেউ লালন ফকির বলেছেন। লালন ফকির মূলত ছিলেন
ভারতীয় উপমহাদেশের একজন আধ্যাত্নিক সাধক। তিনি অসংখ্য বাউল গানের রচয়িতা , সুরকার
ও গায়ক। এই মহান আধ্যাতিক সাধক জন্ম গ্রহন করেন কুস্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার
ভাড়রা গ্রামে।
জন্ম ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দের এক অতি দরিদ্র পরিবারে। লালন ফকিরের জন্ম পরিচয় নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। তিনি হিন্দু না মুসলমান। মূলত তিনি কোন
ধর্মের অনুসারি ছিলেন তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। জানা যায় বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে লালন কুমারখালীর ছেউড়িয়া
গ্রামে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। আর চারিদিকে গড়ে উঠে তার হিন্দু, মুসলিম
বিপুল শিষ্য। তার মৃত্যুকালে প্রায় দশ হাজার শিষ্য ছিল। তাদের মধ্যে কোন জাতি ভেদ
ছিলনা । তিনি ছিলেন জতি ধর্মের উদ্ধে এক মানবতাবাদী মানুষ। তাইতো তিনি তার গানে
মধ্যে বলেছেন----
সব লেকে কয় লালন কি জাত
সংসারে
লালন বলে জাতের কি রুপ
দেখলাম না এই নজরে।
কেউ মালা কেউ তযবি গলায়
তাইলে জাত ভিন্ন বলায়
যাওয়া কিংবা আসার বেলায়
জাতের চিহ্ন রয় কারে।
যদি সুন্নত দিলে হয়
মুসলমান
নারী জাতির কি হয় বিধান।
বামন চিনি পৈতায় প্রমান
বামনি চিনি কেমনে।
এই মহান সাধক ১১৬ বছর বয়সে ১২৯৭ বঙ্গাব্দ ১লা কার্তিক ১৭ অক্টোবর ১৮৯০
খ্রি: শুক্রবার ভোরে কুমারখালীর ছেউরিয়া গ্রামে তার আখরা বাড়িতে শেষ নিশ্বস ত্যগ
করেন।
No comments:
Post a Comment