শিক্ষকের পেশাগত উন্নয়ন: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশ
জি. এম. রাকিবুল ইসলাম
প্রকল্প কর্মকর্তা (প্রভাষক, শিক্ষা),
টিকিউআই প্রজেক্ট, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ।
প্রত্যেক পেশার মানুষের কিছু পেশাগত দায়িত্বকর্তব্য থাকে যা তার পেশাগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে।
একইভাবে যাঁরা শিক্ষক তাঁদের কিছু পেশাগত বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন। যেমন, যিনি যে বিষয়ের শিক্ষক তাঁর সে বিষয়ে গভীর জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়। আবার শুধু জ্ঞান থাকলেই হবে না, তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। যে জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে চাই তার থেকেও তা কীভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে সেটা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আবার জ্ঞান ছড়িয়ে দিলেই হবে না, যে বা যারা তা গ্রহন করছে তা তারা আদৌ গ্রহণ করতে পারছে কিনা, পারলেও কতটা গ্রহন করতে পারছে ইত্যাদিও দেখার বিষয়। আর তা সার্থক ভাবে সম্পন্ন করতে হলে প্রয়োজন- দক্ষতা, যোগ্যতা ও প্রায়োগিক জ্ঞান। শিক্ষকদের সে সকল দক্ষতা, যোগ্যতা ও প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জনের জন্যই প্রয়োজন পেশাগত উন্নয়ন।
নিঃসন্দেহে শিক্ষকতা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা।
বিভিন্ন চাহিদার শিক্ষার্থী একই শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকে এবং তাদের শিক্ষণ-শিক্ষন
কাজে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করেন একজন শিক্ষক। এই একজন শিক্ষককেই সকল
শিক্ষার্থীর শিখন চাহিদা পূরণ করতে হয়। একটু ভেবে দেখলেই বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি
করা যায়। শিক্ষক ভবিষ্যৎ সমাজের জন্য আমাদের শিশুদের গড়ে তোলে। সেই অনাগত
ভবিষ্যতের চাহিদা ও ধরণের কথা মাথায় রেখে তাঁকে পদক্ষেপ নিতে হয়। তাই অন্য যেকোনো
পেশার চেয়ে শিক্ষকতা পেশা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকতা পেশাকে অন্যান্য পেশার জনক বলা
হয় একারনেই। কেননা শিক্ষকই সমাজের জন্য ডাক্তার, উকিল, ইঞ্জিনিয়ার, বিচারক, পুলিশ,
প্রশাসক-দের গড়ে তোলেন। শিক্ষককে এজন্য সকল বিষয়ে সাম্যক জ্ঞান রাখতে হয়। তেমনি
সেই জ্ঞান সময়ের সাথে সাথে আপডেটেড হওয়া উচিত। ১৯৭১ সালের আন্তর্জাতিক শিক্ষা
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, “বর্তমানে বিদ্যালয়গুলো যেসকল শিক্ষার্থী
প্রস্তুত করছে সমাজ তাদের অধিকাংশকেই অপ্রয়োজনীয় বলে বিবেচনা করছে”। অর্থাৎ
ভবিষ্যতের চাহিদার তুলনায় বর্তমানের শিক্ষাব্যবস্থা ততটা কার্যকরি ভূমিকা রাখতে
পারছে না। তার মানে শিক্ষা ততটা আপ টু ডেট নয়। শিক্ষার মূল উপাদানের মধ্যে শিক্ষক
অন্যতম। এই আপডেটেড শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষককে আপডেটেড হতে হবে সর্বাগ্রে।
সময়ের চাহিদার সাথে মিল রেখে শিক্ষকের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়ন করার প্রক্রিয়াই হলো
শিক্ষকের পেশাগত উন্নয়ন। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বায়নের যুগে শিক্ষার্থী ও
বিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষকের ভূমিকাও দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। সেই পরিবর্তনের সাথে তাল
মেলাতে শিক্ষকের পেশাগত উন্নয়নের বিকল্প নেই।
পেশাগত উন্নয়ন প্রযুক্তিগত জ্ঞান,
পেডাগজিক্যাল জ্ঞান এবং বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান উন্নয়নের একটি প্রক্রিয়া। পেশাগত উন্নয়ন এবং অন্যান্য চাকুরিকালীন
প্রশিক্ষণসমূহ শিক্ষকদের অধিকতর উন্নয়নকে তরান্বিত করে। আবাসিক
প্রশিক্ষণ, অব্যাহত প্রশিক্ষণ, চাকুরিকালীন প্রশিক্ষণ, জীবনব্যপী প্রশিক্ষণ, মানব
সম্পদ উন্নয়ন এবং দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স সবকিছুই পেশাগত উন্নয়নের উপায় হিসবে ব্যবহৃত
হতে পারে।
পেশাগত উন্নয়ন কেন প্রয়োজন?
বাংলাদেশের অনেক শিক্ষক যাঁরা স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়িয়ে থাকেন তাঁরা কতজন শিক্ষকতার পূর্বেই শিক্ষকতা সম্পর্কে, শিখন-শিক্ষণ পদ্ধতি ও
তত্ত্ব সম্পর্কে অবগত তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা যায়। অধ্যাপক মোজাফফর
আহমেদ স্যার এর মতে, “ভাল ছাত্র মাত্রই ভাল শিক্ষক নয়”। শিক্ষক একটা বিষয়
খুব ভালোভাবে জানেন কিন্তু তিনি শিক্ষার্থীদের কীভাবে শেখাবেন তা জানেন না; তাহলে তিনি জানা
সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের তেমন কোন লাভ হবে না। অধিকাংশ শিক্ষকই
শিক্ষার্থীদের একটা বিষয় শেখানোর চেষ্টা করেন যদিও তা অপেক্ষা কোন বিষয় কীভাবে শিখতে
হয় তা শেখানোটা জরুরী। তাই বিষয়গত জ্ঞানের পাশাপাশি শিখন-শিক্ষণ তত্ত্ব ও
পদ্ধতি সম্পর্কেও গভীর জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তা ব্যাতীত জ্ঞানের
সম্প্রসারন বা সঞ্চালন কার্যকরভাবে সম্ভব নয়। পেশাদারিত্ব মনোভাবের সাথে কাজ
করার জন্য যে বিষয়গুলো নিশ্চিত করা দরকার তা হলো- পেশাগত মূল্যবোধ ও ব্যক্তিগত
প্রতিশ্রুতি, পেশাগত দক্ষতা, পেশাগত জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা।
পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের শিশুদেরকে বিশ্বনাগরিক হিসাবে
প্রস্তুত করতে শিক্ষকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিভিন্ন শিশু বিভিন্নভাবে শিখে থাকে।
একজন শিক্ষককে একুশ শতকের শিক্ষার্থীর চাহিদা পূরণের জন্য সর্বপ্রথম তাঁকেও একুশ
শতকের শিক্ষার্থী হতে হবে। একথা সর্বজন স্বীকৃত যে, শিক্ষক সর্বদাই একজন
শিক্ষার্থী তবে একজন ভালো শিক্ষার্থী। চাকুরিকালীন সময়ে শিক্ষকদের দক্ষতাকে
শক্তিশালী করার জন্য অনুশীলনের প্রয়োজন রয়েছে। ফলপ্রসু পেশাগত উন্নয়ন প্রক্রিয়া
একদল শিক্ষককে তাদের শিক্ষার্থীদের চাহিদা বিশ্লেষণে সাহায্য করে এবং
শিক্ষার্থীদের সাফল্য অর্জনকে নিশ্চিত করে।
মাঝে মাঝে একজন অভিজ্ঞ শিক্ষকও প্রতিবছর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়,
যেমন- বিষয়ভিত্তিক নতুন নতুন পরিবর্তন, নতুন নতুন শিক্ষণ পদ্ধতি, নতুন প্রযুক্তির
ব্যবহার, নতুন আইন ও প্রক্রিয়া এবং সর্বোপরি শিক্ষার্থীর নিত্যনতুন চাহিদা। যদি
শিক্ষক এই সকল বিষয়ে অভজ্ঞ না হন এবং নিজের দক্ষতার উন্নয়ন না করেন তবে শিক্ষার্থী
ভোগান্তির শিকার হয়। পাশাপাশি একজন নতুন
শিক্ষকের নিকট বিদায়লয়ের অনেক ব্যাপারই নতুন থাকে, যেমন-শ্রেণি ব্যবস্থাপনা,
নির্দেশনা, শিক্ষাক্রম, বিদ্যালয়ের সংস্কৃতি, পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা, আদর্শমান,
অভিভাবকের সাথে সম্পর্ক এবং অন্যান্য শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক। এই নতুন শিক্ষকের
জন্য এই অপরিচিত বিষয়গুলো অনেক সময় বিড়ম্বনা তৈরি করে। তাই তাঁর জন্য পেশাগত
দক্ষতা উন্নয়নের বিকল্প নেই।
পেশাগত উন্নয়নের ধরণ ও উপায়:
“Professional
development is defined as activities that develop an individual’s skills,
knowledge, expertise and
other characteristics as a teacher.”
উপরে সংজ্ঞার আলোকে বলা যায় যে, এই উন্নয়ন আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক,
উপানুষ্ঠানিক বিভিন্নভাবে হতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা
পরিচালিত বিভিন্ন কোর্স, ওয়ার্কশপ, আনুষ্ঠানিক সার্টিফিকেট কোর্স অন্তর্ভুক্ত হতে
পারে, যা কিনা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সমন্বয়ে বা শুধু একটা বিদ্যালয়েও অনুষ্ঠিত হতে
পারে। পেশাগত উন্নয়ন-এর বিভিন্ন ধরণগুলোর মধ্যে আছে-নিজস্ব পড়াশোনা, অনলাইন কোর্স,
কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স (যেমন বিএড, এমএড, এমফিল, ডক্টরেট), বিভিন্ন
স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ, ব্যক্তিগত বা দলীয়, গবেষণা, নির্ধারিত
বিষয়ে সহকর্মীদের মধ্যে আলোচনাচক্র/পাঠচক্র, জোড়ায় ক্লাস মূল্যায়ন, অভিজ্ঞ শিক্ষক
কর্তৃক অন্য শিক্ষকদের কোচিং, অভিজ্ঞ শিক্ষক কর্তৃক নব্য শিক্ষকদের মেন্টরিং, শিক্ষা
বিষয়ক কনফারেন্স, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, অন্যান্য সফল বিদ্যালয় পরিদর্শন ইত্যাদি।
শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন বিভিন্ন সময়ে আয়োজন করা যেতে পারে। যেমন: স্কুল চলাকালীন
সময়ে, ক্লাস শুরু হওয়ার পূর্বে বা পরে, স্কুল ছুটির পরে শিক্ষকের নিজস্ব সময়ে,
গ্রীষ্মকালীন ছুটি বা অন্যান্য ছুটির সময়ে। কোথায় আয়োজন করা যেতে পারে? পেশাগত
উন্নয়ন কেন্দ্রে, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে, শিক্ষা অফিসের কোনো কক্ষে, কোনো
বিদ্যালয়ে, যেকোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, কোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অনলাইনে।
পেশাগত উন্নয়ন: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশ
উন্নত বিশ্বে শিক্ষকদের জন্য শিক্ষক শিক্ষা
আবশ্যিক করা হয়েছে যেন তারা ভালোমত প্রস্তুত হয়ে শিক্ষকতায় আসতে পারে।
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে, যেমন ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস-এ
শিক্ষকরা সরকারি খরছে দুই থেকে তিন বছরের শিক্ষক শিক্ষা পেয়ে থাকে, সেই সাথে
বিনামূল্যে থাকা খাওয়া পায় তারা। এখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্তাবধানে পরিচালিত
স্কুলগুলোতে শিক্ষাদানের প্রশিক্ষণ পায় যেখানে তারা বিষয়গত পেডাগজি অনুশীলনের সাথে
সাথে স্কুলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে। এশিয়ার বেশকিছু দেশেও এই ব্যবস্থা আছে
যেমন সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, হংকং, তাইপে-তে শিক্ষদের চারবছরের সম্মান কোর্স করানো হয়।
অন্যদিকে আমেরিকা-তে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর তাদেরকে
দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। বিভিন্ন দেশে যেমন অস্ট্রেলিয়া,
ফ্রান্স, গ্রীস, ইসরায়েল, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, এবং সুইজারল্যান্ডে
বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষকদেরকে অন্তর্বর্তী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সুইজারল্যান্ডে
প্রতিটা জেলার নতুন শিক্ষকরা মাসে দুইবার একত্রিত হয়ে অভিজ্ঞ একজন শিক্ষকের
তত্তাবধানে বিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে। সিঙ্গাপুরে অভিজ্ঞ শিক্ষকগণ (যারা
শিক্ষা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) প্রত্যেক বিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষকদের
কোচিং এবং উন্নয়ন পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশও এই যাত্রায় অনেক পথ এগিয়েছে। বাংলাদেশে ১৪ টি সরকারি টিচার্স
ট্রেনিং কলেজসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষামূলক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, সরকারি ও
বেসরকারি প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের
পেশাগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রশিক্ষণ
ইনস্টিটিউট শিক্ষকদের পেশাগত প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় ও
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা শিক্ষদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। আবার নতুন
নতুন বিষয়ে সরকারিভাবে শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া জাতীয়
শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি, বিভিন্ন
জাতীয়/আন্তর্জাতিক জার্নাল, পত্রিকা শিক্ষকদের গবেষণা কাজে অর্থায়ন করে। জাতীয় ও
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতি বছর শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ
অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিবছর
তাদের ওয়েবসাইটে শিক্ষকদের জন্য স্কলারশিপ প্রোগ্রামের বিজ্ঞাপন দেয়। শিক্ষকদের
পেশাগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে যা খুবই কার্যকরি ভুমিকা পালন করে।
পেশাগত উন্নয়ন ও শিক্ষকের ভূমিকা
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে এবং বর্তমান
প্রজন্মকে ভবিষ্যৎ সমাজের কার্যকরি নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের
শিক্ষকদেরকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা বিবেচনা করে নিজেদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন
করতে হবে। এর জন্য সর্বপ্রথম চাহিদা নিরুপন করতে হবে। তারপর কীভাবে এই চাহিদা
মেটানো সম্ভব সেই উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এরপর সেই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে
হবে। শিক্ষকের পেশাগত উন্নয়ন মূলত শিক্ষার্থীর উন্নয়নের জন্য তথা শিক্ষাব্যবস্থার
উন্নয়নের জন্য। তাই শিক্ষককে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বিদ্যালয়ে প্রয়োগ
করতে হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য আজকের বিশ্বে
শিক্ষকের পেশাগত উন্নয়নে ব্যপকভাবে সহায়ক। শিক্ষককে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
বিভিন্ন অনলাইন ট্রেনিং প্রোগ্রাম, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন, শিক্ষাক্ষেত্রে
নিত্যনতুন আবিষ্কার, বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এখন খুব সহজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে
জানা সম্ভব। সেজন্য শিক্ষককে জ্ঞানপীপাসু হতে হবে। কোনোভাবেই শিক্ষককে ভুলে গেলে
চলবে না যে, তিনি মানুষ গড়ার কাজে নিয়োজিত। কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ তাঁর হাতে
ন্যস্ত। কোনো শিশুর সাফল্য যেমন তাঁকে আনন্দিত করবে তেমনি কোনো শিশু ব্যর্থ হলে
সেই ব্যর্থতার দায়ভারও তাঁকেই নিতে হবে। সুতরাং শিক্ষককে নিজের দায়িত্বের প্রতি
সচেতন হয়ে নিজেকে সময়পোযোগি করে গড়ে তুলতে হবে। নতুবা ভবিষ্যৎ সমাজের অনুপযোগি
নাগরিক তৈরির দায় তিনি কোনোভাবেই এড়াতে পারবেন না।
সহায়ক গ্রন্থপঞ্জী:
Birman, B.F., Desimone, L., Porter, A.C. &
Garet, M.S. (2000). Designing Professional Development that works. Educational
Leadership, May 2000 (Association for Supervision and Curriculum Development).
Borko, L. (2004). Professional
Development and teacher learning: Mapping the terrain.
Educational Researcher, 33(8). Retrieved from http://www.aera.net/uploadedFiles/Journals_and_Publications/Journals/Educational_Researcher/Volume_
33_No_8/02_ERv33n8_Borko.pdf
Dam, G. ten & Blom, S. (2006). Learning
through participation. The potential of school-based teacher education for developing a professional
identity. Teaching
and Teacher Education, 22, 647-660.
Desimone, L.M. (2009). Improving Impact
Studies of Teachers' Professional Development: Toward Better Conceptualizations and Measures.
Educational Researcher; Apr 2009; 38(3); ProQuest Psychology Journals, 181-199.
Desimone, L.M., Porter, A.C., Garet, M., Yoon, K.S.
& Birman, B. (2002). Does professional development change teachers’ instruction? Results
from a three-year study. Educational Evaluation and Policy Analysis, 24 (2), 81-112.
European Commission (2010). Teachers’
Professional Development: Europe in international
comparison, a
secondary analysis based on the TALIS dataset. Ed.: Jaap Scheerens. Luxembourg 2010.
Garet, M., Porter, M., Desimone, L., Birman, B.,
& Yoon, K. (2001). What makes professional development effective? American
Educational Research Journal, 38(4), 915-946.
Miles, K. H., Odden, A., Fermanich, M., &
Archibald, S. (2004). Inside the
black box of school district spending on professional development: Lessons from comparing five urban
districts. Journal of Education Finance, 30(1),
1-26.
Wei, R. C., Darling-Hammond, L., Andree, A., Richardson, N.,
Orphanos, S.
(2009). Professional learning in the learning profession: A status report on
teacher development in the United States and abroad. Dallas,
TX.
No comments:
Post a Comment